নিজস্ব প্রতিবেদক::
উখিয়ার পূর্বাঞ্চল সীমান্ত দিয়ে কারা মাদকের চালান অনুপ্রবেশ করছে এলাকাবাসী, গ্রাম পুলিশ, ইউপি সদস্য, পুলিশ, র্যাব, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সবাই জানে। তবুও তারা অধরা। যার ফলে ওরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও আছে। প্রশাসনের কাছে আছে তাদের বাসাবাড়ির ঠিকানা। তবে তারা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সূত্রে জানা গেছে, উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়মিত বড় বড় ইয়াবার চালান পাচার করছে রাজাপালং ইউনিয়নের চাকবৈঠা এলাকার রশিদ আহমেদের ছেলে মো: ইউনুস (৩০) এবং একই এলাকার মৃত. ছব্বির আহম্মেদের ছেলে মো: ইব্রাহিম (২৮)।
তারা দুইজন পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার থেকে ইয়াবা ও আইস প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পলাতক আসামি সন্ত্রাসী নবী হোসেন গ্রুপের সদস্যদের হাতে পৌছে দেয়। এসব ইয়াবা ও আইস অনুপ্রবেশের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে রাজাপালং ও রত্নাপালং ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা। তৎমধ্যে রয়েছে তুলাতলী, ডেইলপাড়া, করইবনিয়া ও চাকবৈঠা অন্যতম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানিয়েছেন মিয়ানমার থেকে আসা মাদকের বড়বড় চালান প্রথমে করইবনিয়া ডেইলপাড়া ও চাকবৈঠা এলাকায় জমা করা হয়। পরে সেখান থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৌশলে পাচার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় অসংখ্য মাদক কারবারি রয়েছে, এদের মধ্যে ইয়াবা ও আইসের অন্যতম গডফাদার’রা হলো ইউনুস ও ইব্রাহিম দুজন। কয়েক বছরের ব্যবধানে তারা হঠাৎ কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। অথচ দুইজনই ছিল বেকার। বর্তমানে চর্তুদিকে সিসি কামেরা বসিয়ে ৭/৮ তলার ফাউন্ডেশন দিয়ে নির্মাণ করেছে দালান।
মাদককারবারী ইউনুস ও ইব্রাহিমের এসব অপরাধের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করে না। যদি কেউ করে তাদের ইয়াবা দিয়ে চালান দিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়।
ইউনুস ও ইব্রাহিম এরা দুইজন ইয়াবার বড় চালান নিয়ে বেশ কয়েক বার প্রশাসনের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। কিন্তু তারা জেলফেরত হয়ে আগের চেয়েও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
ইউনুসের বিরুদ্ধে দুইটি মাদক মামলা রয়েছে। যার মামলা নং-১১৮/১১৪১ ও ৯১/২২৬।
একই ভাবে ইব্রাহিম এর বিরুদ্ধেও রয়েছে দুইটি মাদক মামলা। যার নং-৭০/৭৫৩ ও মামলা নং-১৪৪/৪০২।
স্থানীয়দের দাবী, শীর্ষ দুই মাদকের কারবারিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। কারণ এই সব অপরাধীদের কারণে আমাদের উঠতি বয়সী যুব সমাজ দিনদিন ধংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
এক ব্যক্তি বলেন, ‘কারা ব্যবসা করে সেটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু কিছু বলার নাই। বললেই আমরা তাদের টার্গেট হয়ে যাবো। তখন আমাদের উপর উৎপাত শুরু হয়ে যাবে।
উখিয়া থানা পুলিশ বলছে, তথ্য থাকলেও কৌশল ও জনবলের দিক দিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পেরে উঠছেন না তাঁরা। আর পুলিশ বলছে, মাদকের এই হোতাদের ধরতে তাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী জানিয়েছেন, মাদককারবারিরা রাতের আঁধারে বিজিবির চোখ ফাাঁকি দিয়ে সুকৌশলে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তবর্তী ডেইলপাড়া, করইবনিয়া, পূর্ব ডিগলিয়া দিয়ে মাদকের চালান অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেচা-বিক্রি করে থাকে। এসব মাদককারবারীর তালিকা প্রশাসনের হাতে রয়েছে। মাদক নির্মুলে ইউনিয়ন এবং উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নিয়মিত আলোচনা করা হয়।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে কাজ করছে। এলাকার মাদক ও অপরাধ নির্মুলে প্রশাসনের পাশাপাশি এলাকাবাসীকে ভূমিকা রাখতে হবে।
পাঠকের মতামত